৪৫৯৩ কারখানায় বোনাস হয়নি
প্রকাশিত : ০৭:০৬ পূর্বাহ্ণ, ২৬ জুন ২০২৩ সোমবার ৫২ বার পঠিত
ঈদের আর দুই দিন বাকি। কিন্তু এখনো ৪ হাজার ৫৯৩ কারখানা শ্রমিকদের বোনাস দেয়নি। আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী চলতি মাসের ১৫ দিনের বেতন দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত থাকলেও ৯০ শতাংশ কারখানা বেতন দেয়নি। এমনকি মে মাসের বেতন বাকি আছে ৩০৩ কারখানার। শিল্প পুলিশের দেওয়া তথ্যে কারখানা শ্রমিকদের বেতন-বোনাসের এ তথ্য পাওয়া গেছে। অবশ্য উদ্যোক্তারা বলছেন, সরকারি সিদ্ধান্ত হচ্ছে ঈদের আগে সব কারখানায় বোনাস দেওয়া। মালিকরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বোনাস পরিশোধ করবেন। এখনো আরও দুই দিন বাকি আছে। আজকের মধ্যে দেশের বেশির ভাগ কারখানায় বেতন-বোনাস পরিশোধ করা হবে।
শ্রম ভবনে ৬ জুন সরকার, কারখানা মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সমন্বয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান পোশাক শ্রমিকদের জুন মাসের প্রথম ১৫ দিনের বেতন এবং বোনাস ঈদের ছুটির আগে দিতে কারখানার মালিকদের নির্দেশ দেন। বৈঠকে মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, ‘ঈদ যেহেতু মাসের শেষে, মালিকদের উচিত শ্রমিকদের প্রথম ১৫ দিনের বেতন ও ঈদের বোনাস দেওয়া। মালিকরা সক্ষম হলে পুরো মাসের বেতনও দিতে পারেন; কিন্তু সেটা বাধ্যতামূলক নয়।’ এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, ঈদযাত্রায় সুবিধা দিতে সবদিক বিবেচনায় নিয়ে কারখানা মালিকরা শ্রমিকদের সঙ্গে ঈদের ছুটির বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
শিল্প পুলিশের তথ্য বলছে, সারা দেশে শিল্প পুলিশের ৮টি অঞ্চলের মধ্যে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ-এর তৈরি পোশাকসহ অন্য শিল্পকারখানা আছে ৯ হাজার ৯১৫টি। এর মধ্যে রোববার পর্যন্ত বোনাস হয়নি ৪ হাজার ৫৯৩টি কারখানায়। বিজিএমইএভুক্ত ১ হাজার ৬২৪টি কারখানার মধ্যে বোনাস দিয়েছে ৯৬৩টি (প্রায় ৫৯ শতাংশ), বিকেএমইএভুক্ত ৬৯৯টি কারখানার মধ্যে বোনাস দিয়েছে ৪১৭টি (প্রায় ৬০ শতাংশ) এবং বিটিএমএ-এর ৩৫৯টির মধ্যে বোনাস দিয়েছে ২০৬টি কারখানা (প্রায় ৫৭ শতাংশ)।
বিকেএমইএ-এর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আমাদের অধিকাংশ কারখানায় মের বেতন দেওয়া হয়ে গেছে। এখন বোনাস দেওয়া চলছে। কিছু কারখানায় বোনাস দিতে সমস্যা হতে পারে। মালিকদের বলা হয়েছে এ ধরনের সমস্যা থাকলে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে। তিনি বলেন, আমরা এখনো প্রণোদনার টাকা পাইনি। গত তিন মাসে রপ্তানির প্রণোদনা বাবদ ৩ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকে আটকে ছিল। এর মধ্যে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা পেয়েছেন পোশাক মালিকরা। বাকি ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা পেতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেই টাকা ছাড় হলেও শ্রমিকদের বোনাস দেওয়া সহজ হতো। তবে কষ্টে থাকলেও পোশাক মালিকরা বেতন-বোনাস দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিজিএমইএ অবশ্য দাবি করেছে, রোববার পর্যন্ত প্রায় ৯৮ দশমিক ৫ শতাংশ মে মাসের মজুরি পরিশোধ করেছে। ৭০ শতাংশ কারখানা ঈদ বোনাস দিয়েছে। ছুটির আগে বাকি সব কারখানা বোনাস পরিশোধের জন্যও কাজ করছে।
বিজিএমইএ-এর সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কারণে রপ্তানি আয় কম হওয়ায় পোশাক মালিকরা চরম আর্থিক সংকটে আছেন। এ কারণে বোনাস পরিশোধে কিছুটা দেরি হচ্ছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ৪টি দল গঠন করা হয়েছে। ঈদের আগে সব কারখানায় বোনাস দেওয়া হবে।
শ্রমিক নেত্রী কল্পনা আক্তার বলেন, বোনাস নিয়ে অসন্তোষের আশঙ্কা এবার খুবই কম। গুটিকয়েক ছোট কারখানা এবং সাব-কন্টাক্টে কাজ করে-এমন কারখানায় কিছুটা সমস্যা হতে পারে। ২ দিনের মধ্যে সব কারখানায় বোনাস হয়ে যাবে। জুনের অর্ধেক বেতনের বিষয়ে কারখানা মালিকরা শ্রমিকদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
kushtiatime24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।