সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
◈ কুষ্টিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যা ◈ কুষ্টিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে স্কুল ছাত্র বলাৎকারের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেফতার। ◈ কুষ্টিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে গাজা ও ফেনসিডিলসহ ০৪ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার ◈ ভেড়ামারা-রায়টা সড়কের বাঁকাপুল নামক স্থানে দুর্ধর্ষ ডাকাতি ◈ কুষ্টিয়ায় চেয়ারম্যানকে কুপিয়ে জখম। ◈ আজ পৃথিবীর সর্বত্র দিন-রাত সমান ◈ র‌্যাবের যৌথ অভিযানে কুষ্টিয়ার যুবলীগ নেতা জেড এম সম্রাট গ্রেফতার । ◈ ভেড়ামারায় আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ২২৫তম শাখার শুভ উদ্বোধন ◈ কুষ্টিয়ায় চুরির অপবাদে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে পাশবিক নির্যাতনে, আটক-৬ ◈ কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

খালেদা জিয়ার বার্তায় উজ্জীবিত বিএনপি

প্রকাশিত : ০৫:৫৯ অপরাহ্ণ, ৩ জুলাই ২০২৩ সোমবার ৩৯ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

epa03142027 Khaleda Zia, the country's former prime minister and leader of the main opposition Bangladesh Nationalist Party (BNP), waves to supporters during a BNP rally at Paltan in Dhaka, Bangladesh, 12 March 2012. Thousands of people supported the Bangladesh's main opposition party call for a general strike for 29 March to press demands for impartial oversight of elections set for 2014. EPA/ABIR ABDULLAH

‘আন্দোলন চালিয়ে যান, এবার ফল আসবে’-বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার এমন বার্তায় উজ্জীবিত দলটির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী। তারা মনে করছেন, জনগণের প্রত্যাশা পর্যালোচনাসহ সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই চেয়ারপারসন এমন বার্তা দিয়েছেন। তাছাড়া দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বার্তাকে এক করে মেলাতে চান না তারা। নেতাকর্মীদের কাছে খালেদা জিয়া একটি আবেগের নাম। দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ সাহসী নেতাকর্মীরা দলীয় প্রধানের আদেশ বা নির্দেশকে শিরোধার্য বলে মনে করেন। তাই সরকারবিরোধী আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে বিএনপি চেয়ারপারসনের এই বক্তব্য দলের সবার মধ্যে টনিকের মতো কাজ করছে। এমনটি জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা। শুধু সাধারণ নেতাকর্মী ও সমর্থকই নন, দলের নীতিনির্ধারকরাও চেয়ারপারসনের বার্তাকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন। খালেদা জিয়ার পরামর্শকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে চূড়ান্ত করা হচ্ছে সরকারবিরোধী একদফার আন্দোলন। আজ স্থায়ী কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে একদফার কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। এরপর সমমনা দলগুলোর মতামত নিয়ে চূড়ান্ত করা হবে একদফা আন্দোলনের রোডম্যাপ। খুব শিগগিরই তা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হতে পারে।

প্রসঙ্গত, ঈদের দিন দলের স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। কথা প্রসঙ্গে এক নেতা চেয়ারপারসনকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আগামী দিনে আপনি আবার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন ইনশাল্লাহ।’ এসময় নেতাদের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, ‘কে কী হবে, পরেরটা পরে। বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলন সঠিক পথে রয়েছে। আপনারা আন্দোলন চালিয়ে যান। এবার ফলাফল আসবে। ঠিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারলে সরকার দাবি মানতে বাধ্য হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জনসম্পৃক্ত আন্দোলনে এই সরকারকে বিদায় করতে পারলে সেটাই হবে বড় অর্জন।’

জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের এমন বার্তা অবশ্যই আন্দোলনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। তিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর যেমন তার দলে অনেক অনুগত আছে, তেমনই খালেদা জিয়ারও আছে। তার এমন বক্তব্যে দলের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হবে, যেমনটা আমাদের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হয়।

দলের চেয়ারপাসন খালেদা জিয়ার এমন বার্তা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে একটা চাঙা ভাব লক্ষ করা যাচ্ছে। চূড়ান্ত আন্দোলনে রাজপথে নামতে তারা মুখিয়ে আছেন। দলটির স্থায়ী কমিটির দুজন নেতা বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কাছেও বেশ জনপ্রিয়। দীর্ঘদিন তাকে অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছে। এটিকে কেউ ভালোভাবে নিচ্ছে না। প্রকাশ্য রাজনীতিতে না থাকায় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে একধরনের আফসোস বা হতাশা বিরাজ করছে। অনেকেই মনে করেন, চলমান আন্দোলনে খালেদা জিয়া রাজপথের নেতৃত্বে থাকলে পরিস্থিতিই পালটে যেত। জীবনবাজি রেখে নেতাকর্মীরা স্রোতের মতো রাজপথে নেমে আসত। সাধারণ মানুষও সব ভয়ভীতি উপেক্ষা করে আন্দোলনে শরিক হতেন। সেরকম পরিস্থিতিতে গণ-আন্দোলন নিঃসন্দেহে একটা ফলাফলের দিকে ধাবিত হতো।

তবে তারা এটাও মনে করছেন, চেয়ারপারসন সরাসরি আন্দোলনে অংশ নিতে না পারলেও তার একটা কথা শোনার জন্য নেতাকর্মীরা অনেকদিন ধরে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। কেউ তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে ম্যাডাম কী বলেছেন, তা জানতে চান। ঈদের দিন সিনিয়র নেতারা শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যাওয়ায় সবাই অপেক্ষায় ছিলেন আগামী দিনের আন্দোলন নিয়ে চেয়ারপারসন একটা বার্তা দেবেন। অবশ্য আন্দোলন নিয়ে তিনি এমন একটা মিনিংফুল বার্তা দেবেন, তা তাদের প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে। এজন্য এবার ভালো ফল আসবে নিশ্চিত ধরে নিয়েই সবাই মাঠে নামতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যে কোনো ধরনের ত্যাগ স্বীকার করার মানসিকতা নিয়ে আন্দোলনের মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়তে চান।

জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্মমহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, খালেদা জিয়া আমাদের কাছে মায়ের মতো। তার প্রতি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের অন্যরকম আবেগ রয়েছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে রাজপথে তার দীর্ঘ আন্দোলনকে সবাই শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। চলমান আন্দোলনে সবাই তাকে কাছে পেতে চান। তবে চেয়ারপারসন শারীরিকভাবে সঙ্গে না থাকলেও মানসিকভাবে প্রতিমুহূর্তই আমাদের সঙ্গে রয়েছেন।

তিনি বলেন, চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেতাকর্মীরা চেয়ারপারসনের কোনো বার্তা পেলে তারা আরও বেশি উজ্জীবিত হবে। এ সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়া আবার কারামুক্ত হবেন বলে তারা মনে করেন। তাই প্রিয় নেত্রীকে মুক্ত করার আন্দোলনে এবার কেউ পিছু হটবে না।

আলালের মতো প্রায় একই সুরে কথা বলেন দলটির আরেক যুগ্মমহাসচিব খায়রুল কবির খোকন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া আমাদের কাছে শুধু একজন নেত্রী নন, একটি আবেগ ও ভালোবাসার নাম। সেই নেত্রী কোনো বার্তা দিলে তা বাস্তবায়নে দলের নেতাকর্মীরা হাসতে হাসতে জীবন দিতেও দ্বিধা করবে না।

তিনি বলেন, আগামী দিনের আন্দোলন নিয়ে চেয়ারপারসন যে বার্তা দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করবে। রাজপথের আন্দোলনে এ বার্তা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

এদিকে সরকারবিরোধী একদফার আন্দোলনে নামার সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। সাংগঠনিক সক্ষমতা যাচাইয়ে সারা দেশে চলছে রিহার্সেল। ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের যৌথ উদ্যোগে দেশের বিভাগীয় ও বড় জেলা শহরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে তারুণ্যের সমাবেশ। ইতোমধ্যে তিনটি সমাবেশ শেষ হয়েছে। এতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি লক্ষে করা যাচ্ছে, যা আগামী দিনের একদফার আন্দোলনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন নীতিনির্ধারকরা। একই সঙ্গে কৃষক দল, তীঁতীদল, শ্রমিক দল ও মৎস্যজীবী দলের উদ্যোগে ছয় বিভাগে ‘দেশ বাঁচাতে মেহনতি জনতার পদযাত্রা’ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। ১৫ জুলাই চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালী জেলায় হবে প্রথম কর্মসূচি।

সূত্র জানায়, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমেই সরকার পতনের একদফা শুরু করতে চায় বিএনপি। শুরুতে গণ-অনশন, বিক্ষোভ সমাবেশ, পদযাত্রা, মানববন্ধনসহ ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে। ধাপে ধাপে এ আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নেওয়া হবে। তবে এবার স্বল্প সময়ের মধ্যেই চূড়ান্ত আন্দোলনের ফয়সালা করতে চায় দলটি। এক্ষেত্রে সরকারের ওপর বিদেশি চাপসহ উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে হঠাৎ ঘোষণা করা হতে পারে কাঙ্ক্ষিত কর্মসূচি। তবে চূড়ান্ত আন্দোলনেও হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচিতে যাবে না তারা। ‘চলো চলো ঢাকা চলো’, সচিবালয় বা গণভবন ঘেরাও কিংবা ঢাকায় অবস্থানের মতো কর্মসূচি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। সরকার এসব কর্মসূচিতে বাধা দিলে তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ঘোষণা করা হতে পারে কঠোর কর্মসূচি।

শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে ঈদ-পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়কালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও এমন ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, ‘এক বছর ধরে বিভিন্ন দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। জনগণও রাস্তায় নামছেন। আমাদের নতুন করে পদযাত্রার কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। আশা করি, এর মধ্যে একদফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করব। গতবারের চেয়ে এবারের আন্দোলনের ধরন একটু ভিন্ন হবে। শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনে আমরা চূড়ান্ত পর্যায়ে যেতে চাই।’

kushtiatime24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। kushtiatime24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT